সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ডিবি ইউনাইটেড হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক মোমিনুর রহমান মুকুলের বিরুদ্ধে সেনেটারি ন্যাপকিন চুরি, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের গালিগালাজসহ দুর্নীতির অভিযোগ তুলে তাকে অপসারণের দাবিতে ক্লাস বর্জন করেছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। রোববার (১৩ জুলাই) সকাল থেকে ক্লাস বর্জন করে স্কুলের সামনে সাতক্ষীরা-আশাশুনি সড়কে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেন তারা।
বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, স্কুলের শিক্ষক লুৎফুননেছা ডালিয়া, সহকারী প্রধান শিক্ষক কংকন কুমার দাস, আকলিমা খাতুন, মোস্তাফিজুর রহমান, অফিস সহকারী সালাউদ্দীন, ১০ম শ্রেণির শিক্ষার্থী খাদিজা খাতুন, রিক মল্লিক প্রমুখ।
এসময় স্কুলের ১৫ জন শিক্ষক অভিযোগ করে বলেন, প্রধান শিক্ষক মোমিনুর রহমান মুকুল প্রায়ই সময় তাদেরকে গালিগালাজসহ খারাপ ব্যবহার করেন। এছাড়া আর্থিক কেলেঙ্কারির অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। তিনি স্কুলে থাকলে আমরা কোনো ক্লাস নিবো না।
অপরদিকে শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, মেয়েদের সেনেটারি ন্যাপকিন চুরি করেছেন তিনি। প্রধান শিক্ষক পদত্যাগ না করা পর্যন্ত আমরা ক্লাস করবো না। এসময় তারা প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগসহ বিভিন্ন শ্লোগান দিতে থাকেন।
এদিকে খবর পেয়ে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও পুলিশের একটি দল বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন।
নাম প্রকাশে একজন শিক্ষক বলেন, ডিবি ইউনাইটেড মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মমিনুর রহমান মুকুল শিক্ষক হিসাবে বিদ্যালয়ে যোগদান করেছেন ১৯৯৫ সালের ১ জানুয়ারি। তবে যে সনদে তিনি শিক্ষক হয়েছেন সেটি ইস্যু করা হয়েছে একই বছরের আগস্ট মাসের ১৯ তারিখে। অর্থাৎ শিক্ষা সনদ ইস্যু করার ৮ মাস ১৮ দিন আগেই সেই সনদে তিনি চাকরি শুরু করেন। এছাড়া তার আপন চাচা বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি হওয়ায় একাধিক শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন তিনি। তার বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের বিভিন্ন খাতের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় সাবেক এমপি রবির ছত্রছায় থেকে তিনি বিদ্যালয়টিকে তিনি সম্পূর্ন নিজের ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠান বানিয়ে রেখেছেন। এখানো কারো কোন কথা বলার সুযোগ নেই।
এদিকে, গালিগালাজের বিষয়টি অস্বীকার করে প্রধান শিক্ষক মোমিনুর রহমান মুকুল বলেন, আমি কড়া প্রধান শিক্ষক হওয়ায় শিক্ষকরা আমার বিরুদ্ধে লেগেছে। তবে স্কুলের অর্থ আত্মসাতের বিষয়ে তিনি বলেন, আওয়ামীলীগের সময়ে ভবন বরাদ্দের জন্য সাতক্ষীরা-২ আসনের এমপিসহ বিভিন্ন দপ্তরে ঘুষ দেওয়া লেগেছে। এ কারণে স্কুল ফান্ডের টাকা নিয়ে ঘুষ দিয়েছি।
তিনি আরো বলেন, কেউ না চাইলে আমি স্কুলে থাকবো না।
এবিষয়ে সদর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার নারায়ন চন্দ্র মন্ডল বলেন, প্রধান শিক্ষকের বিভিন্ন অনিয়মের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমাদের কাছে রয়েছে। দ্রুত তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের ক্লাসে ফিরে যাওয়ার আহবান জানান তিনি।
খুলনা গেজেট/এএজে